সাতক্ষীরা ১২:২৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
রাত পোহালে সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী  সমিতির নির্বাচন সাতক্ষীরায় জলবায়ু নায্যতার দাবি জানিয়ে দূর্যোগ কবলিত মানুষের সমবেত বিক্ষোভ সাতক্ষীরায় ডেঙ্গু আক্রান্তে সাইদুল ইসলামের মৃত্যুু সাতক্ষীরায় সপ্তাহ ব্যাপী বৃক্ষমেলার উদ্বোধন করলেন- মোস্তাক আহমেদ সাতক্ষীরা দেবহাটার শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুন আটক সাতক্ষীরায় জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ উপলক্ষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত সাতক্ষীরা জেলা গোয়েন্দা শাখার অফিসার ও ফোর্সদের সাথে পুলিশ সুপারের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়ন শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত সাতক্ষীরায় দাফনের ৩ মাস পর কবর থেকে লাশ উত্তোলন সাফ জয়ী তিন ফুটবলারের গণ সংবর্ধনা ২১ নভেম্বর

ভোমরা স্থল বন্দরের আমদানি ডলার সংকটে কমেছে

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৪:২১:৪৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৪ ১০৮ বার পড়া হয়েছে

সাতক্ষীরা কন্ঠ ডেস্কঃ দেশের তৃতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর হিসেবে ১৯৯৬ সালে প্রতিষ্ঠা লাভ করে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর। ভারতের কলকাতা ও হলদিয়া বন্দরের সাথে ভোমরা বন্দরের দূরত্ব বাংলাদেশের যেকোন বন্দর অপেক্ষা কম হওয়ায় ব্যবসায়ীরা এই বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে সুবিধাবোধ করেন। সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরে আমদানি কমে অর্ধেকে নেমে এসেছে। আগে বন্দর দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ৪ থেকে সাড়ে ৪০০ ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাক প্রবেশ করলেও তা নেমে দাঁড়িয়েছে ২০০ নিচে। আর এজন্য ব্যবসায়ীরা দুষছেন ডলার সংকটসহ বন্দরের অনুন্নত অবকাঠামো, ব্যবসায়ীক হয়রানী, দক্ষ নেতৃত্বের অভাবকে।

বন্দর সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে বন্দরটিতে আমদানি ও রপ্তানি কাজে জড়িত রয়েছেন পাঁচ শতাধিক ব্যবসায়ী। আগে প্রতিদিন এই বন্দর থেকে রাজস্ব আদায় হতো তিন থেকে সাড়ে তিন কোটি টাকা। বছর শেষে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ছিল প্রায় ১১০০ কোটি টাকার মতো। আর বিগত ২০২২-২৩ অর্থ বছরে বন্দরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা এক হাজার ২৬ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হলেও আমদানি কমে যাওয়াতে রাজস্ব আদায় হয় মাত্র ৬৩১ কোটি ৭০ লাখ টাকা। যে কারণে ২৩-২৪ অর্থ বছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে ৮৫৩ কোটি ৯৯ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

বিভিন্ন কারনে আমদানি কমে যাওয়াতে ২২-২৩ অর্থবছরের মতো এবারও রাজস্ব পূরণ হওয়া নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ১৭ জানুয়ারি ভোমরা বন্দর দিয়ে ১৪৩, ১৮ জানুয়ারি ১৬৭, ২০ জানুয়ারি ১৪৯, ২১ জানুয়ারি ১৬৮, ২২ জানুয়ারি ১০৯, ২৩ জানুয়ারি ১৫৯ ও ২৪ জানুয়ারি ১৫৯টি ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাক ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। আর আমদানি কমে যাওযার এমন সমস্যা বিগত কয়েক মাস ধরে চলছে।

সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, ব্যবসায়ীক হয়রানীর কারণে যেমন এই বন্দর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। তার উপর ডলার সংকটের কারণে ব্যাংকগুলো নিয়মিত ঋণপত্র দিতে পারছে না। আগে ১০ শতাংশ মার্জিনে ঋণপত্র খোলা যেত, এখন এ ঋণপত্র খুলতে হচ্ছে ১৫০ শতাংশ। আর টাকার মূল্যমান কমে যাওয়ায় ঋণপত্র খোলার সময় ডলার মূল্য ধরা হচ্ছে ১১৫ টাকা, অথচ বিল পাস হচ্ছে ১২৫ টাকা ডলার। এতে আমদানিকারকরা ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ায় ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে উল্লেখযোগ্য ভাবে আমদানি কমে যাচ্ছে।

একাধিক ব্যবসায়ীরা নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, ভোমরা স্থল বন্দর দিয়ে ৭২ ধরনের পণ্য আমদানির অনুমোদন থাকলেও নিয়মিত পণ্য আমদানি হয় ২২টি। যেসকল পণ্যের বেশির ভাগই কাঁচামাল ও ফল। তবে বিগত কয়েক মাস ধরে এই বন্দর দিয়ে কোন ফল আমদানি হচ্ছেনা। তাছাড়া অন্য যেসকল পণ্য আমদানি হয় ভারত থেকে সেগুলো ভোমরা বন্দরে পণ্য আসার পর বন্দর কর্তৃপক্ষ খালাস করতে গড়িমসি করে। খালাস করতে দেরি হওয়ায় কাঁচামালগুলো ট্রাকে পচতে শুরু করে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হন ব্যবসায়ীরা।

তাদের দাবি, কাচাঁমাল আমদানির ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা যেখানে সুবিধা পাবেন সেখানেই পণ্য আমদানি করবেন। ভোমরা বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানিতে কোনো ছাড় দেওয়া হয় না। তাই ভোমরা বন্দর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
দ্বৈতনীতি, অবকাঠামো উন্নয়নের ধীর গতি ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের অবহেলা ও বন্দরের তিনটি বিভাগের সমন্বয় হীনতার কারনে ভোমরা স্থল বন্দরে আমদানি কমে যাওয়ার অন্যতম কারন হিসাবে চিহ্নিত করে তারা বলেন, পার্শ্ববর্তী বেনাপোল বন্দরের সঙ্গে ভোমরা বন্দরের প্রতিযোগিতা চলে শুরু থেকেই।

বেনাপোলসহ অন্য বন্দরে ব্যবসায়ীদের যে পরিমান সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়, তুলনামুলকভাবে ভোমরা বন্দর ব্যবসায়ীরা কোন সুযোগ সুবিধা পাননা। পূর্বে বেনাপোল বন্দর দিয়ে কাঁচামাল ও ফলমূল আমদানি হতো না। ব্যবসায়ীরা ভোমরা বন্দর দিয়ে আমদানি করতো। বর্তমানে বেনাপোল বন্দর দিয়ে কাঁচামাল ও ফলমূল আমদানি হচ্ছে। ফলে ব্যবসায়ীক সুবিধার্থে অনেক ব্যবসায়ী এখন বেনাপোল বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি করায় ভোমরা বন্দরের আমদানি কমেছে।

এব্যাপারে ভোমরা স্থল বন্দর সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের সাবেক আহবায়ক শেখ এজাজ আহমেদ স্বপন বলেন, ভোমরা স্থল বন্দরের আমদানি কমে যাওয়ার পেছনে যে শুধু ডলার সংকট দায়ি বিষয়টা তেমন না। দেশের অন্যান্য বন্দরে আমদানি ও রপ্তানি কার্যক্রম স্বাভাবিক। অথচ ভোমরা স্থল বন্দরে কেন অস্বাভাবিক? প্রশ্ন রেখে তিনি প্রতিবেদককে বলেন, এখানের ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে তাদের সর্বস্ব হারান। এজন্য অনেকে এই বন্দর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। যার প্রভাব পড়েছে আমদানি কার্যক্রমে। তারউপর একটা বন্দরের উন্নয়নে জন্য দক্ষ নেতৃত্বের প্রয়োজন পড়ে। আর এখানে দক্ষ নেতৃত্ব না থাকাতে ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন সমস্যা পোহাতে হয়। আর এই সংক্রান্ত কারণে আমদানি কমেছে বলে দাবি করেন তিনি।

ডলার সংকট অনেকাংশে ভোমরা স্থল বন্দর দিয়ে ভারতীয় পণ্য আমদানিতে প্রভাব ফেলেছে জানিয়ে ভোমরা স্থল বন্দর সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ খান বলেন, চলতি অর্থবছরের শুরু থেকেই বন্দরে ব্যবসা-বাণিজ্য খুব একটা ভালো যাচ্ছে না। ভোমরা বন্দর দিয়ে ব্যবসায়ীদের সব ধরণের পণ্য আমদানির অনুমোদন নেই। বর্তমানে এই বন্দর দিয়ে আমদানিকৃত পণ্যের চাহিদা দেশের বাজারে না থাকাতে ব্যবসায়ীরা অন্য বন্দর দিয়ে ব্যবসা বাণিজ্যে করছেন। তারউপর ডলার সংকটসহ এলসি জটিলতা রয়েছে। আর এই সংক্রান্ত কারণে বন্দর দিয়ে ভারতীয় পণ্য আমদানি কমেছে। একারনে আমদানি বাড়াতে হলে সব ধরনের বৈষম্য দূর করে বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে হবে।

এ ব্যাপারে ভোমরা কাস্টমসের ভোমরা শুল্ক স্টেশনের দায়িত্বরত কাস্টমসের ডেপুটি কমিশনার মোঃ এনামুল হক জানান, পণ্য চাহিদার উপর আমদানি কম-বেশি হয়। ব্যবসায়ীরা যে পরিমাণ এলসি করবেন, তার বিপরীতে পণ্য আমদানি হয়। এখানে কাস্টমসের কোন কিছু করার নেই।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

ভোমরা স্থল বন্দরের আমদানি ডলার সংকটে কমেছে

আপডেট সময় : ০৪:২১:৪৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৪

সাতক্ষীরা কন্ঠ ডেস্কঃ দেশের তৃতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর হিসেবে ১৯৯৬ সালে প্রতিষ্ঠা লাভ করে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর। ভারতের কলকাতা ও হলদিয়া বন্দরের সাথে ভোমরা বন্দরের দূরত্ব বাংলাদেশের যেকোন বন্দর অপেক্ষা কম হওয়ায় ব্যবসায়ীরা এই বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে সুবিধাবোধ করেন। সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরে আমদানি কমে অর্ধেকে নেমে এসেছে। আগে বন্দর দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ৪ থেকে সাড়ে ৪০০ ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাক প্রবেশ করলেও তা নেমে দাঁড়িয়েছে ২০০ নিচে। আর এজন্য ব্যবসায়ীরা দুষছেন ডলার সংকটসহ বন্দরের অনুন্নত অবকাঠামো, ব্যবসায়ীক হয়রানী, দক্ষ নেতৃত্বের অভাবকে।

বন্দর সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে বন্দরটিতে আমদানি ও রপ্তানি কাজে জড়িত রয়েছেন পাঁচ শতাধিক ব্যবসায়ী। আগে প্রতিদিন এই বন্দর থেকে রাজস্ব আদায় হতো তিন থেকে সাড়ে তিন কোটি টাকা। বছর শেষে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ছিল প্রায় ১১০০ কোটি টাকার মতো। আর বিগত ২০২২-২৩ অর্থ বছরে বন্দরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা এক হাজার ২৬ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হলেও আমদানি কমে যাওয়াতে রাজস্ব আদায় হয় মাত্র ৬৩১ কোটি ৭০ লাখ টাকা। যে কারণে ২৩-২৪ অর্থ বছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে ৮৫৩ কোটি ৯৯ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

বিভিন্ন কারনে আমদানি কমে যাওয়াতে ২২-২৩ অর্থবছরের মতো এবারও রাজস্ব পূরণ হওয়া নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ১৭ জানুয়ারি ভোমরা বন্দর দিয়ে ১৪৩, ১৮ জানুয়ারি ১৬৭, ২০ জানুয়ারি ১৪৯, ২১ জানুয়ারি ১৬৮, ২২ জানুয়ারি ১০৯, ২৩ জানুয়ারি ১৫৯ ও ২৪ জানুয়ারি ১৫৯টি ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাক ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। আর আমদানি কমে যাওযার এমন সমস্যা বিগত কয়েক মাস ধরে চলছে।

সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, ব্যবসায়ীক হয়রানীর কারণে যেমন এই বন্দর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। তার উপর ডলার সংকটের কারণে ব্যাংকগুলো নিয়মিত ঋণপত্র দিতে পারছে না। আগে ১০ শতাংশ মার্জিনে ঋণপত্র খোলা যেত, এখন এ ঋণপত্র খুলতে হচ্ছে ১৫০ শতাংশ। আর টাকার মূল্যমান কমে যাওয়ায় ঋণপত্র খোলার সময় ডলার মূল্য ধরা হচ্ছে ১১৫ টাকা, অথচ বিল পাস হচ্ছে ১২৫ টাকা ডলার। এতে আমদানিকারকরা ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ায় ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে উল্লেখযোগ্য ভাবে আমদানি কমে যাচ্ছে।

একাধিক ব্যবসায়ীরা নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, ভোমরা স্থল বন্দর দিয়ে ৭২ ধরনের পণ্য আমদানির অনুমোদন থাকলেও নিয়মিত পণ্য আমদানি হয় ২২টি। যেসকল পণ্যের বেশির ভাগই কাঁচামাল ও ফল। তবে বিগত কয়েক মাস ধরে এই বন্দর দিয়ে কোন ফল আমদানি হচ্ছেনা। তাছাড়া অন্য যেসকল পণ্য আমদানি হয় ভারত থেকে সেগুলো ভোমরা বন্দরে পণ্য আসার পর বন্দর কর্তৃপক্ষ খালাস করতে গড়িমসি করে। খালাস করতে দেরি হওয়ায় কাঁচামালগুলো ট্রাকে পচতে শুরু করে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হন ব্যবসায়ীরা।

তাদের দাবি, কাচাঁমাল আমদানির ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা যেখানে সুবিধা পাবেন সেখানেই পণ্য আমদানি করবেন। ভোমরা বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানিতে কোনো ছাড় দেওয়া হয় না। তাই ভোমরা বন্দর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
দ্বৈতনীতি, অবকাঠামো উন্নয়নের ধীর গতি ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের অবহেলা ও বন্দরের তিনটি বিভাগের সমন্বয় হীনতার কারনে ভোমরা স্থল বন্দরে আমদানি কমে যাওয়ার অন্যতম কারন হিসাবে চিহ্নিত করে তারা বলেন, পার্শ্ববর্তী বেনাপোল বন্দরের সঙ্গে ভোমরা বন্দরের প্রতিযোগিতা চলে শুরু থেকেই।

বেনাপোলসহ অন্য বন্দরে ব্যবসায়ীদের যে পরিমান সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়, তুলনামুলকভাবে ভোমরা বন্দর ব্যবসায়ীরা কোন সুযোগ সুবিধা পাননা। পূর্বে বেনাপোল বন্দর দিয়ে কাঁচামাল ও ফলমূল আমদানি হতো না। ব্যবসায়ীরা ভোমরা বন্দর দিয়ে আমদানি করতো। বর্তমানে বেনাপোল বন্দর দিয়ে কাঁচামাল ও ফলমূল আমদানি হচ্ছে। ফলে ব্যবসায়ীক সুবিধার্থে অনেক ব্যবসায়ী এখন বেনাপোল বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি করায় ভোমরা বন্দরের আমদানি কমেছে।

এব্যাপারে ভোমরা স্থল বন্দর সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের সাবেক আহবায়ক শেখ এজাজ আহমেদ স্বপন বলেন, ভোমরা স্থল বন্দরের আমদানি কমে যাওয়ার পেছনে যে শুধু ডলার সংকট দায়ি বিষয়টা তেমন না। দেশের অন্যান্য বন্দরে আমদানি ও রপ্তানি কার্যক্রম স্বাভাবিক। অথচ ভোমরা স্থল বন্দরে কেন অস্বাভাবিক? প্রশ্ন রেখে তিনি প্রতিবেদককে বলেন, এখানের ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে তাদের সর্বস্ব হারান। এজন্য অনেকে এই বন্দর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। যার প্রভাব পড়েছে আমদানি কার্যক্রমে। তারউপর একটা বন্দরের উন্নয়নে জন্য দক্ষ নেতৃত্বের প্রয়োজন পড়ে। আর এখানে দক্ষ নেতৃত্ব না থাকাতে ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন সমস্যা পোহাতে হয়। আর এই সংক্রান্ত কারণে আমদানি কমেছে বলে দাবি করেন তিনি।

ডলার সংকট অনেকাংশে ভোমরা স্থল বন্দর দিয়ে ভারতীয় পণ্য আমদানিতে প্রভাব ফেলেছে জানিয়ে ভোমরা স্থল বন্দর সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ খান বলেন, চলতি অর্থবছরের শুরু থেকেই বন্দরে ব্যবসা-বাণিজ্য খুব একটা ভালো যাচ্ছে না। ভোমরা বন্দর দিয়ে ব্যবসায়ীদের সব ধরণের পণ্য আমদানির অনুমোদন নেই। বর্তমানে এই বন্দর দিয়ে আমদানিকৃত পণ্যের চাহিদা দেশের বাজারে না থাকাতে ব্যবসায়ীরা অন্য বন্দর দিয়ে ব্যবসা বাণিজ্যে করছেন। তারউপর ডলার সংকটসহ এলসি জটিলতা রয়েছে। আর এই সংক্রান্ত কারণে বন্দর দিয়ে ভারতীয় পণ্য আমদানি কমেছে। একারনে আমদানি বাড়াতে হলে সব ধরনের বৈষম্য দূর করে বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে হবে।

এ ব্যাপারে ভোমরা কাস্টমসের ভোমরা শুল্ক স্টেশনের দায়িত্বরত কাস্টমসের ডেপুটি কমিশনার মোঃ এনামুল হক জানান, পণ্য চাহিদার উপর আমদানি কম-বেশি হয়। ব্যবসায়ীরা যে পরিমাণ এলসি করবেন, তার বিপরীতে পণ্য আমদানি হয়। এখানে কাস্টমসের কোন কিছু করার নেই।