সাতক্ষীরা ০৪:৪৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
রাত পোহালে সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী  সমিতির নির্বাচন সাতক্ষীরায় জলবায়ু নায্যতার দাবি জানিয়ে দূর্যোগ কবলিত মানুষের সমবেত বিক্ষোভ সাতক্ষীরায় ডেঙ্গু আক্রান্তে সাইদুল ইসলামের মৃত্যুু সাতক্ষীরায় সপ্তাহ ব্যাপী বৃক্ষমেলার উদ্বোধন করলেন- মোস্তাক আহমেদ সাতক্ষীরা দেবহাটার শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুন আটক সাতক্ষীরায় জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ উপলক্ষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত সাতক্ষীরা জেলা গোয়েন্দা শাখার অফিসার ও ফোর্সদের সাথে পুলিশ সুপারের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়ন শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত সাতক্ষীরায় দাফনের ৩ মাস পর কবর থেকে লাশ উত্তোলন সাফ জয়ী তিন ফুটবলারের গণ সংবর্ধনা ২১ নভেম্বর

জাজিরায় প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার বিভিন্ন প্রকল্পে দুর্নীতি ও অনিয়ম, তথ্য প্রদানে অনিচ্ছা প্রকাশ।

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১১:৪১:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৪ ৮৪ বার পড়া হয়েছে

মানজারুল ইসলাম মিলন মিয়া : শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা(পিআইও) মো: নজরুল ইসলাম আশ্রায়ন প্রকল্প সহ উপজেলার বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ করছেন নিজের ইচ্ছামত। সেসব প্রকল্পের কাজে ঠিকাদার বা চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান কিংবা ব্যক্তি নিয়োগের বিষয় থাকলেও তিনি সেখানে কোন ঠিকাদার কিংবা চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি নিয়োগ না দিয়ে নিজেই প্রয়োজনীয় মালামাল ক্রয় করে একজন দায়িত্বশীল রেখে কাজ সম্পন্ন করছেন। আর সম্পন্ন হওয়া ও চলমান প্রকল্পের কাজগুলোতে করা হচ্ছে পুরাদস্তুর দুর্নীতি ও অনিয়ম।

গত ১৫ জানুয়ারি জাজিরা উপজেলার ভানু মুন্সী কান্দি এলাকায় নির্মিত একটি আশ্রায়ন প্রকল্পে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা হচ্ছে। সীমানা প্রাচীর নির্মাণে ইট, বালুসহ যেসকল মালামাল ব্যবহার করা হচ্ছে তা অত্যন্ত নিম্নমানের এবং সীমানা প্রাচীর নির্মাণের ক্ষেত্রে যতটা গাঁথুনি প্রয়োজন তাও নিয়ম না মেনে সম্পন্ন করা হচ্ছে।

নির্মাণ কাজে নিম্নমানের মালামাল ব্যবহারের বিষয়টি জানতে সেখানে দায়িত্বরত রুবেল শেখের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখানে আমাকে শুধু নির্মাণ করার কাজটি চুক্তিতে দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনীয় সকল মালামাল পিআইও নজরুল ইসলাম ক্রয় করে দিয়েছেন এবং তিনি যেভাবে কাজ করতে বলেছেন সেভাবেই কাজ সম্পন্ন করছি। আমি এমন চুক্তিতে পিআইও নজরুল ইসলামের অনেক কাজ করি।’

বিষয়টি জানতে সরেজমিন থেকে জাজিরা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নজরুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ‘আমি আমার ভগ্নীপতির মরণোত্তর মিলাদ অনুষ্ঠানে আছি।’
পরে তিনি পরেরদিন অফিসে যেতে বলেন।

পরেরদিন সাংবাদিকরা ঐ কর্মকর্তার দপ্তরে গেলে নজরুল ইসলাম বিভিন্ন ব্যস্ততা দেখিয়ে সারাদিনেও সময় দিতে পারেননি। পরে তার অধিনস্থ উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো: সোহাগের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি পরেরদিন অফিসে যেতে বলেন। সে অনুযায়ী গত ১৭ জানুয়ারি উপজেলা প্রকল্প বাস্তাবায়ন কর্মকর্তা(পিআইও) নজরুল ইসলামের দপ্তরে গেলে তিনি ব্যস্ততা দেখিয়ে সাংবাদিকদের অপেক্ষা করতে বলেন। পরে প্রায় ঘন্টাখানেক সময় পাড় হলে নজরুল ইসলাম তার দপ্তরে আসেন এবং সাংবাদিকদের সাথে সহিংস মনোভাব নিয়ে বিভিন্ন অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। পরে তার সাথে আশ্রায়ন প্রকল্পের সীমানা প্রাচীর নির্মাণের বিষয়ে কথা বলতে গেলে তিনি বলেন, ‘ব্যবহৃত ইট নিম্নমানের নয়। ঐ কাজের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান শেখ ফরিদ এন্টারপ্রাইজ।’

তবে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগের তথ্য সহ বিস্তারিত ও ঐ সীমানা প্রাচীর নির্মাণের বরাদ্দ ও ব্যয় সংক্রান্ত তথ্য প্রদান করতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেন এই কর্মকর্তা এবং চাহিদামত তথ্য পেতে হলে আইনী প্রক্রিয়ায়(তথ্য অধিকার আইনে) তথ্য পাওয়ার আবেদন করতে সাংবাদিকদের পরামর্শ প্রদান করেন।

এ বিষয়ে জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাদিয়া ইসলাম লুনার সাথে কথা বললে তিনি বলেন, ‘প্রকল্প বাস্তাবায়ন কর্মকর্তা যদি অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন এবং কোন অনিয়ম করেন তবে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবো।’

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা সৈয়দ মোঃ আজিম উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নয়, খোঁজ নিয়ে দেখবো।’

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

জাজিরায় প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার বিভিন্ন প্রকল্পে দুর্নীতি ও অনিয়ম, তথ্য প্রদানে অনিচ্ছা প্রকাশ।

আপডেট সময় : ১১:৪১:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৪

মানজারুল ইসলাম মিলন মিয়া : শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা(পিআইও) মো: নজরুল ইসলাম আশ্রায়ন প্রকল্প সহ উপজেলার বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ করছেন নিজের ইচ্ছামত। সেসব প্রকল্পের কাজে ঠিকাদার বা চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান কিংবা ব্যক্তি নিয়োগের বিষয় থাকলেও তিনি সেখানে কোন ঠিকাদার কিংবা চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি নিয়োগ না দিয়ে নিজেই প্রয়োজনীয় মালামাল ক্রয় করে একজন দায়িত্বশীল রেখে কাজ সম্পন্ন করছেন। আর সম্পন্ন হওয়া ও চলমান প্রকল্পের কাজগুলোতে করা হচ্ছে পুরাদস্তুর দুর্নীতি ও অনিয়ম।

গত ১৫ জানুয়ারি জাজিরা উপজেলার ভানু মুন্সী কান্দি এলাকায় নির্মিত একটি আশ্রায়ন প্রকল্পে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা হচ্ছে। সীমানা প্রাচীর নির্মাণে ইট, বালুসহ যেসকল মালামাল ব্যবহার করা হচ্ছে তা অত্যন্ত নিম্নমানের এবং সীমানা প্রাচীর নির্মাণের ক্ষেত্রে যতটা গাঁথুনি প্রয়োজন তাও নিয়ম না মেনে সম্পন্ন করা হচ্ছে।

নির্মাণ কাজে নিম্নমানের মালামাল ব্যবহারের বিষয়টি জানতে সেখানে দায়িত্বরত রুবেল শেখের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখানে আমাকে শুধু নির্মাণ করার কাজটি চুক্তিতে দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনীয় সকল মালামাল পিআইও নজরুল ইসলাম ক্রয় করে দিয়েছেন এবং তিনি যেভাবে কাজ করতে বলেছেন সেভাবেই কাজ সম্পন্ন করছি। আমি এমন চুক্তিতে পিআইও নজরুল ইসলামের অনেক কাজ করি।’

বিষয়টি জানতে সরেজমিন থেকে জাজিরা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নজরুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ‘আমি আমার ভগ্নীপতির মরণোত্তর মিলাদ অনুষ্ঠানে আছি।’
পরে তিনি পরেরদিন অফিসে যেতে বলেন।

পরেরদিন সাংবাদিকরা ঐ কর্মকর্তার দপ্তরে গেলে নজরুল ইসলাম বিভিন্ন ব্যস্ততা দেখিয়ে সারাদিনেও সময় দিতে পারেননি। পরে তার অধিনস্থ উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো: সোহাগের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি পরেরদিন অফিসে যেতে বলেন। সে অনুযায়ী গত ১৭ জানুয়ারি উপজেলা প্রকল্প বাস্তাবায়ন কর্মকর্তা(পিআইও) নজরুল ইসলামের দপ্তরে গেলে তিনি ব্যস্ততা দেখিয়ে সাংবাদিকদের অপেক্ষা করতে বলেন। পরে প্রায় ঘন্টাখানেক সময় পাড় হলে নজরুল ইসলাম তার দপ্তরে আসেন এবং সাংবাদিকদের সাথে সহিংস মনোভাব নিয়ে বিভিন্ন অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। পরে তার সাথে আশ্রায়ন প্রকল্পের সীমানা প্রাচীর নির্মাণের বিষয়ে কথা বলতে গেলে তিনি বলেন, ‘ব্যবহৃত ইট নিম্নমানের নয়। ঐ কাজের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান শেখ ফরিদ এন্টারপ্রাইজ।’

তবে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগের তথ্য সহ বিস্তারিত ও ঐ সীমানা প্রাচীর নির্মাণের বরাদ্দ ও ব্যয় সংক্রান্ত তথ্য প্রদান করতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেন এই কর্মকর্তা এবং চাহিদামত তথ্য পেতে হলে আইনী প্রক্রিয়ায়(তথ্য অধিকার আইনে) তথ্য পাওয়ার আবেদন করতে সাংবাদিকদের পরামর্শ প্রদান করেন।

এ বিষয়ে জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাদিয়া ইসলাম লুনার সাথে কথা বললে তিনি বলেন, ‘প্রকল্প বাস্তাবায়ন কর্মকর্তা যদি অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন এবং কোন অনিয়ম করেন তবে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবো।’

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা সৈয়দ মোঃ আজিম উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নয়, খোঁজ নিয়ে দেখবো।’