সাতক্ষীরা ০৩:৫১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ৯ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সাতক্ষীরা মিডিয়া সেন্টারের কমিটি গঠিত। সভাপতি শেখ হাসান গফুর, সাধারন সম্পাদক এম ইদ্রিস আলী সাতক্ষীরায় দুইশ কোটি টাকার টেন্ডার তছরুপ : বদলির পরেও দিনরাত অফিসে, নথি গায়েবের অভিযোগ ১৫ বছরে সাড়ে ৪ হাজার মানুষকে হত্যা করেছে: অ্যাটর্নি জেনারেল কালিগঞ্জ রোকেয়া মনসুর মহিলা কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি হলেন সাতক্ষীরা জেলা বি এন পির আহবায়ক রহমত উল্লাহ পলাশ সাতক্ষীরায় যথাযথ মর্যাদায় ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন সাতক্ষীরার ডিবি গার্লস হাইস্কুলে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আশাশুনি উপজেলা জামায়াতের দোয়া ও আলোচনা সভা ২৫ ফেব্রুয়ারি ‘জাতীয় শহীদ সেনা দিবস’ ঘোষণার সিদ্ধান্ত সাতক্ষীরায় সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হেলপার শাহাদাত হোসেন মারা গেছে টিকটক ভিডিও বানাতে নিষেধ করায় স্বামীর উপর অভিমান করে স্ত্রীর আত্মহত্যা

লুটপাট চাঁদাবাজির ঘটনা চাপা দিতে এনজিও সদস্যদের নিয়ে মিছিল

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১১:১৩:২৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ১০ বার পড়া হয়েছে

সাতক্ষীরা কন্ঠ ডেস্ক: সাতক্ষীরার তালায় একের পর এক কাণ্ড ঘটিয়ে চলেছেন চরমপন্থী নেতা ফারুক জোয়ার্দ্দার। শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় নিজেকে একটি সংগঠনের নেতা ঘোষণা দিয়ে থেমে থাকেননি। বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১২টার দিকে বেসরকারি এনজিও সংস্থার সদস্যদের অনুদানের প্রলোভন দেখিয়ে ডাকেন তালায়। এরপর তালা প্রেসক্লাবের বৈধ কমিটির সভাপতি ও জাতীয় পার্টির নেতা নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে মানববন্ধনে দাঁড় করিয়ে দেন। পরে তালা উপশহরে একটি মিছিলের নেতৃত্ব দিতেও দেখা যায় কথিত চরমপন্থী নেতা ও ক্লিনিক ব্যবসায়ী ফারুক জোয়ার্দ্দারকে।
চরমপহ্নি দলের সাথে সম্পৃক্ততা থাকায় ২০০১ সাল থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরে আসেন অভিযুক্ত ফারুক জোয়ার্দ্দার। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে তখন পালিয়ে যান মালয়েশিয়ায়। এক দশকেরও বেশী সময় অবস্থান করেন সেখানে। ২০২২ সালে দেশে আসার পর ভোলপাল্টে টাকা ছড়িয়ে হয়ে ওঠেন তালার আওয়ামীলীগ নেতাদের প্রিয়জন।
স্থানীয়রা জানান, ২০২৪ সালের উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামীলীগ নেতা সরদার মশিয়ার রহমানের পক্ষে সরাসরি মাঠে নামেন ফারুক জোয়ার্দ্দার। মশিয়ার রহমানকে দিয়ে ভোটে জয়ী করতে মাঠে ময়দানে সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে দেখা যায় ফারুক জোয়ার্দ্দারকে। ২০২৪ সালে ৫ আগষ্টের পর তাণ্ডব, লুটপাট, চাঁদাবাজি, দখলবাজিসহ নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়েন। এখন নিজেকে তালা বিএনপির নিয়ন্ত্রক হিসেবে জাহির করে আসছেন। বর্তমানে আওয়ামীলীগের নেতারা পুলিশের অভিযানে আটক হলে তাদের ছাড়াতে থানায় তদবির করতেও দেখা যাচ্ছে বিতর্কিত জোয়ার্দ্দারকে।
তালার জেয়ালা ঘোষপাড়ার একাধিক ব্যক্তি জানান, গত ৫ই আগস্ট জেয়ালা শেখেরহাট ঘোষপাড়া গরু ট্রাকে করে তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দিয়ে ৩০ লক্ষ টাকার চাঁদাবাজি করে। স্বদেশ ঘোষের দোকানে ১৫০০ বস্তা ফিড লুট করে ও তুষার ঘোষে দোকান থেকে ডিজেল, পেট্রোল, কীটনাশকসহ নগদ টাকা লুট করে। সুভাষ ঘোষের দোকান ঘর থেকে ৪০০ বস্তা চাউল লুট করে। কিন্তু তারা ভয়ে আইনের আশ্রয়ে যেতে পারেননি। বিএনপির কোন পদে না থাকলেও এমন দেখায় সে বিএনপির কর্ণধর।
তালা পুরাতন ফুটবল মাঠের কোনে থাকা দোকান মালিক জাহিদ অর রশিদ জানান, তার দোকান থেকে দামি কসমের্টিক্স ফার্নিচারসহ নগদ ৮৫ হাজার টাকা মিলে ১০-১২ লক্ষ টাকার মালামল লুট করেছে ফারুক জোয়ার্দ্দার। আমাদের চারটি দোকান ঘর ভাংচুর করে নিশ্চিহ্ন করেছে। চারটি দোকান ঘরের মধ্যে বিউটি পার্লার ও আসাদ আট ঘর এবং আমার কসমের্টিক্স দোকান ছিল। ফারুক জোয়ার্দ্দারের ক্লিনিকের সামনের দক্ষিণ পার্শ্বে সরকারী রাস্তা থাকলেও পূর্ব পার্শ্বের চারটি দোকান ভেঙ্গে ক্লিনিকের জায়গা প্রশারিত করেছে ৫ আগস্ট। চাঁদাবাজি, দখলবাজিসহ সব সময় সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে লিপ্ত। ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না অনেকেই। বিদেশে পাঠানোর নামে অর্ধশত কোটি টাকারও বেশী বিভিন্ন মানুষদের টাকা আত্নসাৎ করে সর্বশান্ত করেছে। তার অত্যাচারে এলকাবাসী অতিষ্ট। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থার তদন্ত দাবি করছি।
এদিকে, প্রেসক্লাব দখল ঘিরে একদিকে হাস্যরস অন্যদিকে খোদ বিএনপির নেতাকর্মীদের মাঝেই প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। এটিকে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে মনে করছেন অনেকে।
তালা উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক সাঈদুর রহমান সাঈদ বলেন, যাদের দলীয় কোনো পদ পদবী নেই, দায়িত্ব নেই যারা নিজেকে বিএনপির অনেক বড় নেতা মনে করছে। আসলে দল তাদেরকে দলীয় হিসেবে গ্রহণ করেনি। তারা যেসব অপকর্ম করছে এর দায়ভার আমাদের দল কখনোই নেবে না। আমরা যারা সচেতন রয়েছি, মাঠের লোক রয়েছি। আমরা এই সকল অপকর্মের অন্যায়ের বিরুদ্ধে অতীতেও ছিলাম, স্বৈরাচারের বিরুদ্ধেও ছিলাম। এখন যারা আমাদের দলকে বিতর্কিত করার জন্য চেষ্টা করছেন তাদের বিরুদ্ধে আমাদের স্বোচ্ছার সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।
তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে তালা কলারোয়া হাবিবুল ইসলাম হাবিবকে বিজয়ী করার জন্য গ্রাম, ওয়ার্ড, পাড়া মহল্লায় সকল অঙ্গসহযোগী সংগঠণ আমরা একযোগে কাজ করছি। তাকে নির্বাচিত করেই আমরা ঘরে ফিরবো।
সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির আহবায়ক রহমতউল্লাহ্ পলাশ জানান, যে কোন অবৈধ দখলকে আমরা বা আমাদের দল সমর্থন করে না। আমরা এটি বার বার বলছি। যাতে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়। প্রেসক্লাব দখল করে নিবেন এটি ঠিক নয়। এ ব্যাপারে আমি কথা বলবো।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

লুটপাট চাঁদাবাজির ঘটনা চাপা দিতে এনজিও সদস্যদের নিয়ে মিছিল

আপডেট সময় : ১১:১৩:২৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

সাতক্ষীরা কন্ঠ ডেস্ক: সাতক্ষীরার তালায় একের পর এক কাণ্ড ঘটিয়ে চলেছেন চরমপন্থী নেতা ফারুক জোয়ার্দ্দার। শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় নিজেকে একটি সংগঠনের নেতা ঘোষণা দিয়ে থেমে থাকেননি। বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১২টার দিকে বেসরকারি এনজিও সংস্থার সদস্যদের অনুদানের প্রলোভন দেখিয়ে ডাকেন তালায়। এরপর তালা প্রেসক্লাবের বৈধ কমিটির সভাপতি ও জাতীয় পার্টির নেতা নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে মানববন্ধনে দাঁড় করিয়ে দেন। পরে তালা উপশহরে একটি মিছিলের নেতৃত্ব দিতেও দেখা যায় কথিত চরমপন্থী নেতা ও ক্লিনিক ব্যবসায়ী ফারুক জোয়ার্দ্দারকে।
চরমপহ্নি দলের সাথে সম্পৃক্ততা থাকায় ২০০১ সাল থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরে আসেন অভিযুক্ত ফারুক জোয়ার্দ্দার। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে তখন পালিয়ে যান মালয়েশিয়ায়। এক দশকেরও বেশী সময় অবস্থান করেন সেখানে। ২০২২ সালে দেশে আসার পর ভোলপাল্টে টাকা ছড়িয়ে হয়ে ওঠেন তালার আওয়ামীলীগ নেতাদের প্রিয়জন।
স্থানীয়রা জানান, ২০২৪ সালের উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামীলীগ নেতা সরদার মশিয়ার রহমানের পক্ষে সরাসরি মাঠে নামেন ফারুক জোয়ার্দ্দার। মশিয়ার রহমানকে দিয়ে ভোটে জয়ী করতে মাঠে ময়দানে সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে দেখা যায় ফারুক জোয়ার্দ্দারকে। ২০২৪ সালে ৫ আগষ্টের পর তাণ্ডব, লুটপাট, চাঁদাবাজি, দখলবাজিসহ নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়েন। এখন নিজেকে তালা বিএনপির নিয়ন্ত্রক হিসেবে জাহির করে আসছেন। বর্তমানে আওয়ামীলীগের নেতারা পুলিশের অভিযানে আটক হলে তাদের ছাড়াতে থানায় তদবির করতেও দেখা যাচ্ছে বিতর্কিত জোয়ার্দ্দারকে।
তালার জেয়ালা ঘোষপাড়ার একাধিক ব্যক্তি জানান, গত ৫ই আগস্ট জেয়ালা শেখেরহাট ঘোষপাড়া গরু ট্রাকে করে তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দিয়ে ৩০ লক্ষ টাকার চাঁদাবাজি করে। স্বদেশ ঘোষের দোকানে ১৫০০ বস্তা ফিড লুট করে ও তুষার ঘোষে দোকান থেকে ডিজেল, পেট্রোল, কীটনাশকসহ নগদ টাকা লুট করে। সুভাষ ঘোষের দোকান ঘর থেকে ৪০০ বস্তা চাউল লুট করে। কিন্তু তারা ভয়ে আইনের আশ্রয়ে যেতে পারেননি। বিএনপির কোন পদে না থাকলেও এমন দেখায় সে বিএনপির কর্ণধর।
তালা পুরাতন ফুটবল মাঠের কোনে থাকা দোকান মালিক জাহিদ অর রশিদ জানান, তার দোকান থেকে দামি কসমের্টিক্স ফার্নিচারসহ নগদ ৮৫ হাজার টাকা মিলে ১০-১২ লক্ষ টাকার মালামল লুট করেছে ফারুক জোয়ার্দ্দার। আমাদের চারটি দোকান ঘর ভাংচুর করে নিশ্চিহ্ন করেছে। চারটি দোকান ঘরের মধ্যে বিউটি পার্লার ও আসাদ আট ঘর এবং আমার কসমের্টিক্স দোকান ছিল। ফারুক জোয়ার্দ্দারের ক্লিনিকের সামনের দক্ষিণ পার্শ্বে সরকারী রাস্তা থাকলেও পূর্ব পার্শ্বের চারটি দোকান ভেঙ্গে ক্লিনিকের জায়গা প্রশারিত করেছে ৫ আগস্ট। চাঁদাবাজি, দখলবাজিসহ সব সময় সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে লিপ্ত। ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না অনেকেই। বিদেশে পাঠানোর নামে অর্ধশত কোটি টাকারও বেশী বিভিন্ন মানুষদের টাকা আত্নসাৎ করে সর্বশান্ত করেছে। তার অত্যাচারে এলকাবাসী অতিষ্ট। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থার তদন্ত দাবি করছি।
এদিকে, প্রেসক্লাব দখল ঘিরে একদিকে হাস্যরস অন্যদিকে খোদ বিএনপির নেতাকর্মীদের মাঝেই প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। এটিকে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে মনে করছেন অনেকে।
তালা উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক সাঈদুর রহমান সাঈদ বলেন, যাদের দলীয় কোনো পদ পদবী নেই, দায়িত্ব নেই যারা নিজেকে বিএনপির অনেক বড় নেতা মনে করছে। আসলে দল তাদেরকে দলীয় হিসেবে গ্রহণ করেনি। তারা যেসব অপকর্ম করছে এর দায়ভার আমাদের দল কখনোই নেবে না। আমরা যারা সচেতন রয়েছি, মাঠের লোক রয়েছি। আমরা এই সকল অপকর্মের অন্যায়ের বিরুদ্ধে অতীতেও ছিলাম, স্বৈরাচারের বিরুদ্ধেও ছিলাম। এখন যারা আমাদের দলকে বিতর্কিত করার জন্য চেষ্টা করছেন তাদের বিরুদ্ধে আমাদের স্বোচ্ছার সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।
তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে তালা কলারোয়া হাবিবুল ইসলাম হাবিবকে বিজয়ী করার জন্য গ্রাম, ওয়ার্ড, পাড়া মহল্লায় সকল অঙ্গসহযোগী সংগঠণ আমরা একযোগে কাজ করছি। তাকে নির্বাচিত করেই আমরা ঘরে ফিরবো।
সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির আহবায়ক রহমতউল্লাহ্ পলাশ জানান, যে কোন অবৈধ দখলকে আমরা বা আমাদের দল সমর্থন করে না। আমরা এটি বার বার বলছি। যাতে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়। প্রেসক্লাব দখল করে নিবেন এটি ঠিক নয়। এ ব্যাপারে আমি কথা বলবো।