সাতক্ষীরা ১১:৫২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১১ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সাবেক চেয়ারম্যান আবু হেনা শাকিল গ্রেফতার দামারপোতায় মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে ধ্বস্তাধস্তির ঘটনায় থানায় ধর্ষনের চেষ্টার অভিযোগ করায় এলাকায় তোলপাড়  সাতক্ষীরা সেনাকর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করে অর্থ আত্মসাৎ এর অভিযোগ মাজহারুল ইসলাম নয়নের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরা মিডিয়া সেন্টারের কমিটি গঠিত। সভাপতি শেখ হাসান গফুর, সাধারন সম্পাদক এম ইদ্রিস আলী সাতক্ষীরায় দুইশ কোটি টাকার টেন্ডার তছরুপ : বদলির পরেও দিনরাত অফিসে, নথি গায়েবের অভিযোগ ১৫ বছরে সাড়ে ৪ হাজার মানুষকে হত্যা করেছে: অ্যাটর্নি জেনারেল কালিগঞ্জ রোকেয়া মনসুর মহিলা কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি হলেন সাতক্ষীরা জেলা বি এন পির আহবায়ক রহমত উল্লাহ পলাশ সাতক্ষীরায় যথাযথ মর্যাদায় ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন সাতক্ষীরার ডিবি গার্লস হাইস্কুলে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আশাশুনি উপজেলা জামায়াতের দোয়া ও আলোচনা সভা

১৭৩ নং সোরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান চলছে এক শিক্ষক দিয়ে

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৩:২৭:২৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ মার্চ ২০২৪ ১০৪ বার পড়া হয়েছে

সাতক্ষীরা কন্ঠ ডেস্ক:সাতক্ষীরা শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা দ্বীপ ইউনিয়নের ১৭৩নং সোরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক শিক্ষককে দিয়ে চলছে পাঠদান কার্যক্রম।

৬ই মার্চ সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়টির শিশু শ্রেণি থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত ৩টি ক্লাসে ৩৫০জন শিক্ষার্থীর পাঠদান সামলাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে ওই শিক্ষককে। এক ক্লাসে গেলে অন্য ক্লাস থাকে ফাঁকা।

ফলে একদিকে যেমন শিক্ষার্থীরা কাক্সিক্ষত পড়াশোনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অন্যদিকে প্রতিষ্ঠানটি নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন অভিভাবকগণ। বারান্দায় ছাত্র-ছাত্রীরা দৌড়াদৌড়ি করছে। একটি শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করাছেন একজন প্যারা শিক্ষক।
এই বিদ্যালয়ে শিক্ষক ছিল ৩জন। আর বাকি ১জন শিক্ষক বদলী হয়ে অন্যত্র চলে যাওয়ায় শিক্ষক না থাকায় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা করতে গিয়ে অলস সময় পার করে ঘরে ফিরতে হয় শিক্ষার্থীদের।

এ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা নিয়ে উদ্বিগ্নতার মধ্যে আছেন অভিভাবকসহ এলাকাবাসী। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রধান শিক্ষক ওমর ফারুক শ্যামনগরে থাকেন। সপ্তাহে এক-দুদিন স্কুলে আসেন। বাকি সময় অফিসে কাজ আছে বলে অজুহাত দেখিয়ে আসেন না। তিনি বিদ্যালয়টি শুরু থেকে কর্মরত আছেন।

শিক্ষক সংকটে থাকায় চতুর্থ শ্রেণির এক শিক্ষার্থী জানায়, ৩য় শ্রেণি থেকে ৫ম শ্রেণির ৩টি ক্লাস একজন শিক্ষকই নেন। অনেক সময় স্যার আমাদের পড়া দিয়ে আবার অন্য ক্লাসে চলে যান। এ জন্য স্যার আমাদের ক্লাসের পড়া ভালোভাবে বুঝার উঠার আগেই ক্লাসের সময় চলে যায়। সামনে আমাদের পরীক্ষা, আমরা কি করবো লিখবো জানিনা। ইতোমধ্যে শিক্ষক না থাকায় আমাদের পড়ালেখার খুব ক্ষতি হচ্ছে।

এবিষয়ে অভিভাবক ওহিদ ইসলাম বলেন, হেড স্যার ঠিকমতো স্কুলে আসেন না, মাঝেমধ্যে আসেন। একজন শিক্ষক হাফিজুর স্যার ও এলাকার ২-৩ জন প্যারা শিক্ষক দিয়ে স্কুল চালান। এই বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষক সংকট থাকলেও শিক্ষা অফিস কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। শিক্ষক সঙ্কটের কারণে অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদের প্রাইভেট মাস্টার দিয়ে পড়াশোনা করাচ্ছেন। সামনে পরীক্ষা। আমাদের সন্তানের ভবিষ্যত নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। সরকার কোটি টাকা খরচ করে সুন্দর একটি ভবন দিয়েছে পড়াশোনা শেখার জন্য। কিন্তু শিক্ষা অফিসারদের গাফলতির কারণে আমাদের সন্তানরা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

বিদ্যালয়ের একমাত্র সহকারি শিক্ষক হাফিজুর রহমান বলেন, শিশু থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাসগুলো নিতে হচ্ছে। শিক্ষক সঙ্কটে বিদ্যালয়ের সার্বিক শিক্ষা কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে। ৫ম শ্রেণীর ক্লাস নিতে গেলে ৩য় শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা বিশৃঙ্খলা করে। বিদ্যালয়ে আমাকে গেট খোলা, পতাকা উত্তোলন, পাঠদানসহ সব সামলাচ্ছি। এতে করে একার পক্ষে বিদ্যালয় সামলানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তাই দ্রুত শিক্ষক দেওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।

এবিষয়ে প্রধান শিক্ষক ওমর আলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি অফিসের কাজে উপজেলাতে আছি। স্থানীয়দের অভিযোগে সপ্তাহে এক-দু’দিন স্কুলে আসেন প্রশ্ন করতেই প্রধান শিক্ষক ফোন কেটে দেন। শ্যামনগর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি আপনি জানিয়েছেন, আমি খতিয়ে দেখবো।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

১৭৩ নং সোরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান চলছে এক শিক্ষক দিয়ে

আপডেট সময় : ০৩:২৭:২৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ মার্চ ২০২৪

সাতক্ষীরা কন্ঠ ডেস্ক:সাতক্ষীরা শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা দ্বীপ ইউনিয়নের ১৭৩নং সোরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক শিক্ষককে দিয়ে চলছে পাঠদান কার্যক্রম।

৬ই মার্চ সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়টির শিশু শ্রেণি থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত ৩টি ক্লাসে ৩৫০জন শিক্ষার্থীর পাঠদান সামলাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে ওই শিক্ষককে। এক ক্লাসে গেলে অন্য ক্লাস থাকে ফাঁকা।

ফলে একদিকে যেমন শিক্ষার্থীরা কাক্সিক্ষত পড়াশোনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অন্যদিকে প্রতিষ্ঠানটি নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন অভিভাবকগণ। বারান্দায় ছাত্র-ছাত্রীরা দৌড়াদৌড়ি করছে। একটি শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করাছেন একজন প্যারা শিক্ষক।
এই বিদ্যালয়ে শিক্ষক ছিল ৩জন। আর বাকি ১জন শিক্ষক বদলী হয়ে অন্যত্র চলে যাওয়ায় শিক্ষক না থাকায় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা করতে গিয়ে অলস সময় পার করে ঘরে ফিরতে হয় শিক্ষার্থীদের।

এ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা নিয়ে উদ্বিগ্নতার মধ্যে আছেন অভিভাবকসহ এলাকাবাসী। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রধান শিক্ষক ওমর ফারুক শ্যামনগরে থাকেন। সপ্তাহে এক-দুদিন স্কুলে আসেন। বাকি সময় অফিসে কাজ আছে বলে অজুহাত দেখিয়ে আসেন না। তিনি বিদ্যালয়টি শুরু থেকে কর্মরত আছেন।

শিক্ষক সংকটে থাকায় চতুর্থ শ্রেণির এক শিক্ষার্থী জানায়, ৩য় শ্রেণি থেকে ৫ম শ্রেণির ৩টি ক্লাস একজন শিক্ষকই নেন। অনেক সময় স্যার আমাদের পড়া দিয়ে আবার অন্য ক্লাসে চলে যান। এ জন্য স্যার আমাদের ক্লাসের পড়া ভালোভাবে বুঝার উঠার আগেই ক্লাসের সময় চলে যায়। সামনে আমাদের পরীক্ষা, আমরা কি করবো লিখবো জানিনা। ইতোমধ্যে শিক্ষক না থাকায় আমাদের পড়ালেখার খুব ক্ষতি হচ্ছে।

এবিষয়ে অভিভাবক ওহিদ ইসলাম বলেন, হেড স্যার ঠিকমতো স্কুলে আসেন না, মাঝেমধ্যে আসেন। একজন শিক্ষক হাফিজুর স্যার ও এলাকার ২-৩ জন প্যারা শিক্ষক দিয়ে স্কুল চালান। এই বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষক সংকট থাকলেও শিক্ষা অফিস কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। শিক্ষক সঙ্কটের কারণে অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদের প্রাইভেট মাস্টার দিয়ে পড়াশোনা করাচ্ছেন। সামনে পরীক্ষা। আমাদের সন্তানের ভবিষ্যত নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। সরকার কোটি টাকা খরচ করে সুন্দর একটি ভবন দিয়েছে পড়াশোনা শেখার জন্য। কিন্তু শিক্ষা অফিসারদের গাফলতির কারণে আমাদের সন্তানরা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

বিদ্যালয়ের একমাত্র সহকারি শিক্ষক হাফিজুর রহমান বলেন, শিশু থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাসগুলো নিতে হচ্ছে। শিক্ষক সঙ্কটে বিদ্যালয়ের সার্বিক শিক্ষা কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে। ৫ম শ্রেণীর ক্লাস নিতে গেলে ৩য় শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা বিশৃঙ্খলা করে। বিদ্যালয়ে আমাকে গেট খোলা, পতাকা উত্তোলন, পাঠদানসহ সব সামলাচ্ছি। এতে করে একার পক্ষে বিদ্যালয় সামলানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তাই দ্রুত শিক্ষক দেওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।

এবিষয়ে প্রধান শিক্ষক ওমর আলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি অফিসের কাজে উপজেলাতে আছি। স্থানীয়দের অভিযোগে সপ্তাহে এক-দু’দিন স্কুলে আসেন প্রশ্ন করতেই প্রধান শিক্ষক ফোন কেটে দেন। শ্যামনগর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি আপনি জানিয়েছেন, আমি খতিয়ে দেখবো।